মো: সানাউল্লাহ্ রিয়াদ- ‘পুলিশ আবারও নতুন উদ্যমে কাজ করবে। তবে ছোট ছোট বিষয়গুলোকে ব্যাপক পরিসরে হাইলাইটস্ না করে সেটি সালিস কিংবা আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমি যখন সমাধান দিতে না পারব, তখন আপনারা সংবাদ পরিবেশন করেন, তাতে কোনো আপত্তি নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের একটি দ্রুত সেবাদানকারী হটলাইন রয়েছে। একজন এসপির থেকেও ত্রিপল নাইন (৯৯৯) শক্তিশালী। পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলো, আর এখনও থাকবে’।
বরগুনায় সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার মো: ইব্রাহিম খলিল সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার বলেন- ‘পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা ফিরিয়ে এনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে কাজ করব। তাই এই জেলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বরগুনা জেলা পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা করবে এবং এই সর্বাত্মক চেষ্টায় আপনাদের আমি সর্বাত্ত্বক সহযোগিতা চাচ্ছি। আমি প্রত্যাশা করছি আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন।’
তিনি তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন- ‘পুলিশ তার কাজের ভূমিকায় ফিরে আসবে। পুলিশের যে কাজ, সেটা সে করবে। তবে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ কিংবা মামলা করার পূর্বে বিষয়টি খতিয়ে দেখা এবং মামলার পরেও তা খতিয়ে দেখে গ্রেফতার করার প্রয়োজন হলে কেবল তখনই গ্রেফতার করা হবে।’
তিনি বলেন- পুলিশ কোন দলিয় সরকারের অধিনে নেই। আমরা চাই একদম নিরপেক্ষ হয়ে অপরাধের ধরণ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের ব্যাপারে বরগুনা জেলার পুলিশ কর্মকর্তাদের বলা রয়েছে। মাদককে বিন্দু পরিমান ছাড় দেয়া যাবে না। মাদকের সাথে যদি কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকে, তাহলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে। এর বিকল্প কিছু নাই। পাবলিকের জন্যও যে আইন, পুলিশের জন্যও একই আইন। মাদকের কারণে যেভাবে পাবলিক জেলে যাবে, তেমনি পুলিশও জেলে যাবে।’ সারা বাংলাদেশের ন্যায় বরগুনায়ও পুলিশ সুপারে রদবদল হয়েছে। তবে গত দুই মাস আগে পুলিশ সুপার মো: আবদুস ছালামের বদলী হলে বরগুনা পুলিশ সুপার হয়ে আসেন মোঃ রাফিউল আলম, পিপিএম। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে আবারও পুলিশের এ বড় পর্যায়ে রদবদল হওয়ায় রাফিউল আলম এর স্থলে খুলনা হাইওয়ে পুলিশ থেকে বদলী হয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর বরগুনার পুলিশ সুপার হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হন মোঃ ইব্রাহিম খলিল। তিনি ২৫ তম বিসিএস এর একজন পুলিশ ক্যাডার। তাঁর গ্রামের বাড়ি পার্শ্ববর্তী জেলা পটুয়াখালী। বরগুনায় যোগদানের পরপরই প্রথম দিনই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
তিনি সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে বরগুনা শহরে অবস্থিত বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের মধ্যে প্রেসক্লাব, প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিক ফোরাম, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম, রিপোর্টার্স ইউনিটি, রিপোর্টার্স ক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।
নবাগত পুলিশ সুপার এ মতবিনিময় সভায় সূচনা বক্তব্যে ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনে প্রাণ বিসর্জণ দেয়া আবু সাইদ, মুগ্ধ সহ সকলকে স্মরণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) মোঃ জহুরুল ইসলাম হাওলাদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আবদুল হালিম, বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান, অফিসার ইনচার্জ (ডিবি) মোঃ বশির আলম, জেলা বিশেষ শাখার ডিআইও-১ এস এম জিয়াউল হক। এসময় বক্তব্য রাখেন- বরগুনা প্রেসক্লাব’র সভাপতি অ্যাড. গোলাম মোস্তফা কাদের, সাবেক সভাপতি চিত্ত রঞ্জন শীল, অ্যাড. সঞ্জিব কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক জাফর হোসেন হাওলাদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সোহেল হাফিজ, আবু জাফর মোঃ সালেহ। এছাড়াও বরগুনা জেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকাগুলোর মধ্যে দ্বীপাঞ্চল পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ মোশাররফ হোসেন, সৈকত সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জহিরুল হাসান বাদশা ও স্বাধীন বাণী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক চৌধূরী মুনীর হোসেন স্থানীয় সমস্য ও সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
এসময় আমন্ত্রিত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ নবাগত পুলিশ সুপারকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।