শামসুল আলম- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ওবায়দুল কাদের সব সময় বলতেন না, খেলা হবে, আজ উনি কোথায়? ৫ তারিখ আমাকে বিদ্রুপ করে বলেছিলেন আমরা পালাবো না। আর বলেছিলেন ফখরুল সাহেব আপনার বাড়িতে কি থাকতে দিবেন? এখন তাকে আমি বলব, আমার বাসায় আসেন। কোথায় চলে গেছেন। আপনি কোথায় আছেন দেশবাসী জানে না। আপনাকে ভারতে পালাতে হয়েছে। আপনি এই দেশের নেতা কিন্তু পালেতে হয়েছে, কারন আপনি এই দেশের মানুষের বিপরীতে কাজ করেছেন।
তিনি গতকাল বুধবার দুপুরে হরিপুর ঈদগাহ ময়দানে হরিপুর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
হরিপুরবাসীর সাথে সম্পর্ক দির্ঘদিনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, একসময় এ এলাকাগুলিতে বিএনপির মানুষজন কম ছিলেন। বেশ কয়েকজন আছেন, তাদের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বিএনপি শক্তিশালী হয়। অনেক অত্যাচার অনাচার সত্তেও যারা বর্তমানে কমিটিতে আছেন, যারা আগেও ছিলেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। জালিম ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার দীর্ঘ ১৬ বছর আমাদের উপরে অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে। এই এলাকার অসংখ্য মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। সেই অবস্থার পরিসমাপ্তি হয়েছে। যেই হাসিনা একজন প্রতাপশালী নেতা হয়ে গেছিলেন। আজ পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারনে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। যখন তিনি চলে যান তার আগে কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ আসছিলেন গণভবনে। ওই সময় তিনি তাড়াহুড়ো করে হেলিকাপ্টারে করে পাশের দেশ ভারতে পালিয়ে যান। এ বিষয়ে একটি কথা রয়েছে, যে সোমা লংঘন করিও না, করলে আল্লাহ তায়ালা তালহে ক্ষমা করেন না। আল্লাহ যাকে খুশি এম,পি বানান, মন্ত্রী বানান, সম্রাট বানান, রাষ্ট্রপতি বানান, আবার যে কোন সময় তাকে ফকির বানিয়ে দেন। আজকে দেখেন শেখ হাসিনা ভারতে গিয়ে খুব করুন অবস্থার মধ্যে পরেছেন। যারা কিনা দাপটের সাথে আনাদের শাষন করতো, জুলুম-নির্যাতন করতো, জমি নিয়ে নিত, ব্যবসা নিয়ে নিত, কাউকে কিছু করতে দিত না। আজকে তারা জেলের ভেতরে চলে গেছেন। আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলেদের নামেও অনেক মামলা দিয়ে তাদের কারাগারে রাখা হয়েছে, তার পরও কেউ সত্যের পথ ছেড়ে যায়নি। ৫ তারিখে তারা পালিয়ে গেলেন। এখান থেকে আমরা কি শিক্ষা নিলাম; যে আল্লাজর নির্দেশের বাহিরে কিছু হয় না। এখন কি গল্প বের হয়ে আসছে, আয়নাঘর বের হয়েছে। আগে সেই আয়নাঘরে বিএনপি, জামায়াত, ছাত্রদের নিয়ে আটকিয়ে নির্যাতন করেছে। আর এছাড়াও অনেকের এখন অবধি খবরও পাওয়া যাচ্ছে না। আল্লাহর অশেষ রহমতে ছাত্র জনতার আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট, খুনী সরকারের পতন হয়েছে। অসংখ্য ছাত্র দের পংগু হতে হয়েছে, অনেক কে হত্যা করেছে। যাক আজ আমরা সাধীন। তবে এই সাধীনতা রক্ষা করতে হলে আওয়ামীলীগের মত হলে হবে না। সকলকে জনগনের জন্য কাজ করতে হবে। নেতা কর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে কোন ধরনের অন্যায় কাজের সাথে জড়াবেন না। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। নতুন সরকার আছে, তারাও বলেছে যে কিছু কিছু কাজ আওয়ামীলীগ খুব করাপ করে গেছে, যেমন মানুষের ভোটের আধিকার ছিল না, কেউ দিতে পারেনি। সেই জিনিসগুলি ঠিক করতে সময় দিতে হবে। তাই সরকারকে আমরা সেই সময় টুকু দিতে চাই। তারা নিরপেক্ষ, আমাদের উচিত তাদের সহযোগিতা করা। আসুন আমরা সবাই মিলে দেশটাকে সুন্দর করি। দেশ নেত্রী বগম খালেদা জিয়া দেষের জন্য অনেক করেছেন, তিনি অসুস্থ। আমরা তার সুস্থতার জন্য আমরা দুয়া করি, আল্লাহ তাকে আবার সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য জেড মর্তুজা তুলাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
পরে বিকালে তিনি বালিয়াডাঙ্গীতে আরএকটি পথসভা করে নেতাকর্মী সজাগ থাকার নির্দেশ দেন এবং সভায় একসাথে দেশ গঠনে কাজ করার পরামর্শ দেন।।