জিএম কিবরিয়া – রাজশাহীর দুর্গাপুরের হাটবাজার গুলোতে জমে উঠেছে জমজমাট খেজুর গুড়ের বাজার। দুর্গাপুরের খেজুরের গুড় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিনই চলছে হাজার হাজার মণ গুড় কেনাবেচা। দিন জুড়ে গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞ চলছে কৃষকদের বাড়িতে।
সরজমিনে দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখাযায়, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের মধ্যে গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহ করছেন। পরে তা জ্বাল দিয়ে তৈরি করছেন গুড়। সেই গুড় বিভিন্ন হাটবারে, দুর্গাপুরে বাজার, কানপাড়া হাট, আমগাছী বাজার, আলীপুর বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি রবি ও বুধবার বসে দুর্গাপুর হাট। আর সোমবার ও শুক্রবার কানপাড়া হাট বসে। এই দুই হাটেই সবচেয়ে বেশি গুড় বেচাকেনা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলা জুড়ে ৫০ হাজার ৬০০টি খেজুর গাছ রয়েছে বছরে ২ হাজার ২৫ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হয়। গুড় বিক্রি হবে প্রায় ৫ কোটি টাকার।
গুড়ের পাইকারী ক্রেতা আশকান জানান , আমি নিয়মিত দুর্গাপুর বাজার থেকে গুড় ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি আড়ৎ গুলোতে সরবরাহ করী। এখানকার গুড়ের মান অনেক ভালো দামে কম হওয়াতে ভালো লাভ হয়। লালিগুড় ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত কিনছি এবং পাটালী ১৩০ হতে ১৬০ টাকা পর্যন্ত কিনছি।
উপজেলা রইপাড়া এলাকার গাছি মনিরুল ইসলাম জানান, আমার ৫৮ টি খেজুর গাছ রয়েছে আমি নিয়মিত প্রতিটি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে থাকি। অনেকেই গুড়ের রং ভালো করতে এবং বেশি লাভের আশায় হাইড্রোজ, ফিটকারী, ও চিনি মিশায়। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে গুড়ের ভাল বাজার তৈরি হয়েছে। তারা সম্পূর্ণ ভেজাল মুক্ত গুড় চায়। তাদের নিকট লালী গুড় ২০০ টাকা পাটালী গুড় ২৫০ টাকায় বিক্রি করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী জানান, প্রতিটি খেজুর গাছ ৬-৭ বছর বয়স থেকে রস দেওয়া শুরু করে । ২৫- ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত রস দেয় গাছগুলো। তিনি আরও জানান, এই উপজেলার খেজুর গুড়ের খ্যাতি সারাদেশ-ব্যাপী রয়েছে। আম,মাছ,পানের পড়েই খেজুর গুর গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।