ঝিনাইদহ – বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা সহ্য করবে না বিএনপি। ফ্যাসিবাদ সরকারকে সমর্থন দিয়ে গণতন্ত্র হত্যার অপরাধে ভারতকে আর্ন্তজাতিক আদালতে দাঁড় করানো হবে। কুখ্যাত হাসিনা ও তার দোসরদের লুন্ঠিত পাচার করা টাকা ফেরত আনতে হবে। তাদের টাকা যেসব দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তা উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে। আর তা না হলে এই দেশে থাকা হাসিনা বাহিনীর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকূলে নিতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে সংস্কার শেষ করা সম্ভব নয়। আনইশৃঙ্খলার চরম অবনতি এ অবস্থায় দেশে একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। সেই সরকার এসে আইনশৃঙ্খলা উন্নতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন করতে পারবে। তাই নির্বাচন নিয়ে রোড ম্যাপ দিতে হবে। নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা সহ্য করবে না বিএনপি। আন্দোলন সংগ্রামে সমমনা রাজনৈতিক দল নিয়ে সরকার গঠন করার প্রতিশ্রুতিও দলের পক্ষে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে খুনি হাসিনা মানেই ছিল আইন, সে যেটা বলবে সেটাই আইনে পরিণত হতো। এ জন্য দেশে আইনের শাসন ছিল না, ছিল না কোন গণতন্ত্র। হাসিনা ভারতকে কাছে নিয়ে দেশের সবকিছুই বিকিয়ে দিয়েছিল। বিগত ১৭ বছরে অনির্বাচিত ফ্যাসিবাদ সরকারকে ভারত সরকার সমর্থন দিয়ে খুন, গুম, হত্যা, বিদেশে টাকা পাচার ও গণতন্ত্র হত্যা করতে সহযোগিতা করেছে। এ অপরাধে ভারতকে আর্ন্তজাতিক আদালতে দাঁড় করানো হবে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বিএনপির ৩১ দফা মানুষের মুক্তির সনদ। দেশে নির্বাচনী রোডম্যাপ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে না আসলে জুলাই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে। বিএনপি সব দল নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। জননেতা তারেক রহমান এ নিয়ে এখনো কাজ করছেন।
আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, যে কেউ দল গঠন করতেই পারে, তাতে আমাদের কিছু যায় আসেনা। কিন্তু সরকারে বসে আবোল তাবোল কথা বলা ঠিক নয়। আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হতে দেব না।
ফ্যাসিষ্ট হাসিনার দলের নেতাকর্মীদের দলে না ভেড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভোল পাল্টে বিএনপিতে ঢোকার চেষ্টা করছে। তাই তৃণমুল নেতাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। সমাবেশে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, ফ্যাসিষ্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে সামনে ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কিন্তু পেছনে ছিলেন কে? এই পেছনে থাকা মানুষটিই হচ্ছেন তারেক রহমান। তিনি পেছনে থেকে পরিকল্পিত ভাবে এই আন্দোলন পরিচালিত করেছিলেন। তাই যারা এই আন্দোলনে তারেক রহমান ও বিএনপির কোন অবদান নেই বলে অপপ্রচার করছেন, তারা মূলত আন্দোলনের নেপথ্যে থাকা পিতাকেই অস্বীকার করছেন।
নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খার চরম অবনতি ও ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্ত মোকাবিলার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মীর রবিউল ইসলাম লাভলু, একে এম ওয়াজিদ আলী, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির নেতা এ্যাড মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, সাজেদুর রহমান পপপু, আলমগীর হোসেন আলমসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভাটি পরিচালনা করেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা।