স্টাফ রিপোর্টার- রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা ৪ নং দেলুয়াবাড়ি ইউপির অপসারিত চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম ও মামুনের জমি সংক্রান্ত বিরোধের ধরে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মাঝে ব্যপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলে রিয়াজুল ইসলামের সমর্থক ফেরদৌসী বেগম নিহত হয়েছেন। আরো ৫ জন গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন এদের মাঝে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন।
২২ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) উপজেলা দেলুয়াবাড়ী ইউপির ক্ষিদ্রলক্ষীপুর গ্রামে বেলা বারোটার দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ১৪৪ ধারা আমান্য করে বিবদমান পান বরজে পানি সেচ দিতে গেলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনা স্থলে ফেরদৌসী বেগম নামে এক নারী নিহত হয়েছে। অপরদিকে গুরুতর আহত হয়েছেন সাইদুর রহমান, আব্দুর জব্বার, আলম, জিন্নাত আলী, জেসমিন আক্তার। দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন,শাহিদুল ইসলাম, সাইদুল, জাহানারা, জায়েদা, মামুন, রাজিয়া, রজুফা বেগম।
জানাযায়, আওয়ামী লীগ নেতা রিয়াজুল চেয়ারম্যান বিএনপির সমর্থক মামুনুর রশিদের মাঝে ক্ষিদ্রলক্ষীপুর মৌজার ৭০ নং খতিয়ানের ১ একর ৩ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। এর সূত্র ধরে গত ৭ ফেব্রুয়ারী মামুনুর রশিদ লোকজন বিবাদমান জমি দখলের উদ্দেশ্যে আম গাছ কর্তন করে দখলের চেষ্টা চালায়। এতে উভয়পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে, রিয়াজুল চেয়ারম্যান পক্ষ দাবি করে দুর্গাপুর থানায় কর্মরত এ. এস. আই সাকিবুল ইসলামের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মামুনুর রশিদ পেশী শক্তি ব্যবহার করে জমি দখলের উদ্দেশ্যে আম গাছ কেটেছেন। অপরদিকে মামুনের ছেলে জাহিদ হাসান পাইক, জোরপূর্বক তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ আনেন চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি ২৬৫ দাগের ১৮ শতাংশ জমির উপর আদালত কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারী করা পান বরজে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে তবে পান বরজে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এতে রিয়াজুল চেয়ারম্যান ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে হাসানোর চেষ্টার অভিযোগ তোলেন মামুনও তার সমর্থকেরা। এর সুত্র ধরে ব্যপক সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে ঘটনায় ইন্ধন যোগানো পুলিশ সদস্য এ.এস.আই সাকিবের বিচার দাবি করেছে খুনিদের ফাঁসি দাবি করেছে। দুর্গাপুর থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন। মামুন তার ছেলে জাহিদ হাসান সহ বেশ কয়েকজনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে মামলা দায়ের হলে তোদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা জানান, হামলায় ফেরদৌসি বেগম গুরুতর আহত হন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি আরও জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে তাঁরা পাঁচ-সাতজনকে আটক করে থানায় নিয়েছেন। কারা কারা হামলার সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। হামলায় জড়িত অন্যদেরও আটকের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হবে। আর ময়নাতদন্তের জন্য নিহত নারীর মরদেহ রামেকের মর্গে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।