ঝিনাইদহ – ঝিনাইদহের পরিবেশপ্রেমী ও ‘গাছপাগল’ নামে পরিচিত জহির রায়হান দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ র¶ায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। গাছ লাগানো, পাখি ও বন্যপ্রাণী সংর¶ণসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। এবার বজ্রপাত প্রতিরোধে এক নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তালবীজ রোপণ করেছেন, যা বজ্রপাত কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা যায়, গত কয়েক বছরে তিনি সদর উপজেলার আঠারো মাইল থেকে সাহেব বাজার, কৃষ্ণপুর থেকে বেতাই, নগরবাথান থেকে ডেফলবাড়ীয়া সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে অন্তত ১৫ হাজার তালবীজ রোপণ করেছেন। তার এই প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে অনেক গাছ বড় হয়ে উঠেছে এবং এলাকায় সবুজের আবরণ সৃষ্টি হয়েছে।
সদর উপজেলার গান্না গ্রামের লিটন মাহমুদ বলেন, জহির রায়হানের মতো আমাদের প্রত্যেককেই পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। বজ্রপাত প্রতিরোধে তালগাছ বেশি করে লাগানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে হবে। তবেই আমরা প্রকৃতির ভয়াবহতা থেকে নিজেদের র¶া করতে পারব এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে পারব।
কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হারুন-অর রশীদ বলেন, জহির রায়হান শুধু তালবীজই রোপন করেন নি, তিনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় খেজুর গাছ, আম, জাম, বাবলাসহ নানা জাতের গাছের চারা রোপন করেছেন। তার এই উদ্যোগ আমরা সকলে গ্রহণ করলে পরিবেশটা আরও সুন্দর হতো।
এ বিষয়ে জহির রায়হান বলেন, প্রতি বছর বজ্রপাতে বহু মানুষ মারা যায়। আমি চাই প্রকৃতিকে সহায়তা করে মানুষের জীবন র¶া করতে। তাই তালবীজ রোপণের উদ্যোগ নিয়েছি। স্থানীয়রাও এতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, যা আমাকে আরও উৎসাহিত করছে।
তার এই উদ্যোগ ইতোমধ্যে ঝিনাইদহের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। স্থানীয়দের মতে, এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে বজ্রপাত প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, বজ্রপাত বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে প্রাণহানি বেড়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, তাল, নারকেল, সুপারি ও খেজুরগাছ বজ্রপাত প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। জহির রায়হানের এই উদ্যোগ শুধু ঝিনাইদহ নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও অনুসরণ করা উচিত। এতে পরিবেশের ভারসাম্য র¶া হবে এবং মানুষের জানমাল নিরাপদ থাকবে।
খাইরুল ইসলাম নিরব/