বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর যারাই দেশ পরিচালনা করেছে, তারা সবাই হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে। এবার হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন ইসলামী সরকার।
তিনি আরও বলেন, যারা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে হিন্দু সম্প্রদায়কে ভয়-ভীতির হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে এবার হিন্দুরা ভয় পাবে না। হিন্দুদের কেউ বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এখন হিন্দুদের স্লোগান- “সব মার্কা দেখা শেষ, দাঁড়িপাল্লার বাংলাদেশ।”
শুক্রবার খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ ম-লের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি ও অতিরিক্ত জিপি অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের ঘোঘসাই সাধু প্রমথ গাইন, উপজেলা হিন্দু কমিটির সহ-সভাপতি ডা. হরিদাস ম-ল, কানাইলাল কর্মকার, প্রভাষক প্রশান্ত কুমার ম-ল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার ম-ল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ডুমুরিয়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আপোষ সিংহ, ধামালিয়া ইউনিয়নের সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘিয়া ইউনিয়নের সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়নের সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়নের সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়নের সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়নের সভাপতি তন্ময় ম-ল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নের সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়নের সভাপতি তরুণ কুমার ম-ল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক শ্রীমতি প্রিয়াঙ্কা ম-ল, মাগুরখালী ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়নের সভাপতি অনিমেষ ম-ল, গুটুদিয়া ইউনিয়নের সভাপতি মনোরঞ্জন ম-ল, শরাফপুর ইউনিয়নের সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়নের সভাপতি স্বদেশ হালদার এবং ডুমুরিয়া ইউনিয়নের সভাপতি অরুণ কুমার আচার্য প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামী সরকার। যারা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
তিনি আরও বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি- জামায়াতে ইসলামী, যার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।”
চব্বিশ সালের আন্দোলনে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাবি, চবি, রাবি, জাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে; আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।
সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক।” আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।
মতুয়া সংঘের সভাপতি ডা. সুদীপ্ত কুমার সুন্দর ম-ল বলেন, “আমরা আর ‘সংখ্যালঘু’ বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে- হিন্দু মানেই কোনো নির্দিষ্ট দল নয়।”
এদিকে, হিন্দু সম্মেলনকে ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। বাদ্যযন্ত্রসহ নারী-পুরুষ ও যুবকরা এতে অংশ নেন। সমাবেশ শেষে এক বিশাল গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দী।
 
			 
                                 
		    
 
                                












