শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও:: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসন থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবারও ধানের শীষ প্রতীকে লড়াই করবেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক লড়াই, আন্দোলন, জেল-জুলুম পেরিয়ে নিজের এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে ফিরে এসে নির্বাচনী মাঠে নামছেন দলের হাল ধরে রাখা এই অভিজ্ঞ নেতা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব নিজেই। সেখানে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে তার নিজের নাম ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে প্রার্থী হিসেবে নাম আসে সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাহিদুর রহমানের। তবে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের প্রার্থী এখনও ঘোষণা করেনি দলটি।
তবে মির্জা ফখরুলের নিজ আসনে প্রার্থী হওয়ার খবরে ঠাকুরগাঁও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা মনের মধ্যে আনন্দের ইমেজ। অকেই বরছেন ধানের শীষের জন্য এ আসন আবারও এক হবে। জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে, এমনকি গ্রাামীণ জনপদেও এখন দলটির মহাসচিবকে ঘিরে আলোচনা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কে এর ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী করতে মান চোষে বেরাচ্ছে দলটির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা। এতে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে মির্জা ফকরূল ইসলাম বিজয়ী করতে হাজার হাজার মানষের সমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঘোষণা করা হচ্ছে তারেক রহমানের ৩১ দফার ইশতেহার। উন্নয়ন হবে জেলার। রুপান্তরিত করা হবে আধুনিক জেলায়।
স্থানীয়রা বলছেন, ঠাকুরগাঁও-১ আসনটি সবসময়ই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি আসন। এখানে ব্যক্তিত্ব, সংগঠন ও মাঠপর্যায়ের গণসংযোগ সবকিছু মিলিয়ে লড়াই হয় তীব্র। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রার্থিতা আসনটিকে আরও আলোচনায় এনেছে। তবে এবার আওয়ামী লীগ না থাকায় মূল লড়াই হবে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরা সদস্য দেলাওয়ার হোসেনের সঙ্গে।
এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রার্থিতা ঘোষণায় ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস বলেন, আমাদের গর্ব, আমাদের অনুপ্রেরণা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবারও ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন। এটা শুধু একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, এটা ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের অনুভূতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি ইতিহাস। তিনি এই জেলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে হৃদয়ের সম্পর্ক তৈরি করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি স্যারের নেতৃত্বে ঠাকুরগাঁও আবারও নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাবে। ছাত্রদলের প্রতিটি কর্মী এখন আরও উদ্দীপ্ত, আরও ঐক্যবদ্ধ। আমরা মাঠেছি জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, এবং ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে।
চিলারং ইউনিয়ন জেলা যুবদলের সদস্য সচীব মো.আসাদুজ্জামান বলেন, মহাসচিব স্যার ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন এটা আমাদের জন্য গর্বের ও আনন্দের খবর। তিনি শুধু দলের নেতা নন, তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের আশার প্রতীক। স্যারের প্রার্থিতা ঘোষণার পর পুরো জেলায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
, আমরা বিশ্বাস করি ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে ঠাকুরগাঁওবাসী আবারও প্রমাণ করবে এই জেলার মানুষ এখনো ন্যায়, গণতন্ত্র ও আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।
জেলা মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিস বলেন, স্যারের মনোনয়ন আমাদের জন্য উৎসবের মুহূর্ত। মহাসচিবকে বিজয়ে পৌঁছানোর জন্য মাঠে প্রতিটি শক্তি দিয়ে কাজ করছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মহাসচিবের নেতৃত্বে ঠাকুরগাঁও আবারও আশা ও সাহসের বাতিঘর হয়ে উঠবে। আমাদের লক্ষ্য এক প্রিয় মহাসচিবকে বিজয়ী করে ঠাকুরগাঁওকে আরও শক্তিশালী ও স্বপ্নময় জেলা হিসেবে গড়ে তোলা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি শিক্ষকতাও করেছেন। তিনি ১৯৬৩ সালে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কৃষি ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান এবং ২০১৬ সালের জাতীয় সম্মেলনে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন।














