খাইরুল ইসলাম- বসন্ত এসেছে। ঋতুরাজ বসন্ত। শীতের বিদায়লগ্নে। প্রকৃতির উদার অঙ্গনে। মহাসমারোহে। অপূর্ব রূপরাশি ও সৌন্দর্য ধারণ করে। প্রকৃতির সর্বত্র সাজ সাজ রব। দখিনা মৃদুমন্দ মলয়। গাছে গাছে পাখির কলতান। কোকিলের কুহুতান। ফুটেছে রক্তশিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া। বাতাবি লেবুর ফুল, আম্র-মুকুলের হৃদয় জুড়ানো সৌরভ আর মৌমাছির মধুর গুঞ্জরণে চারদিক সরগরম। আমোদিত। পুলকিত। জোয়ার উঠেছে বিশ্বপ্রকৃতি ও মানবমনে। সেই মন গাইছে, ‘আহা আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়’। মানুষ ও প্রকৃতির বুকে নব প্রাণ জাগানিয়া এই বসন্তকে বর্ণিল আয়োজনে বরণ করেছে নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়। বসন্তের উচ্ছলতা ও উন্মাদনায় মেতেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী।
(১৬.০২.২০২৫) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে (কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেত্রকোণা) জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বসন্তবরণ উৎসব। সকাল ১১:১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম বসন্তবরণ উৎসবের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আনিছা পারভীন, রেজিস্ট্রার ড. হারুন-অর-রশিদ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। সম্মিলিত বসন্তবরণ আনন্দযজ্ঞটির পূর্ণতা পায় র্যালির মাধ্যমে। অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক অব্দি চলে এই সম্মিলিত আনন্দ-জোয়ার—র্যালি।
সম্পূর্ণ বাঙালিয়ানা এবং অন্তরঙ্গ মঞ্চব্যবস্থাপনায় বসন্তবরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকাল ৪টায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় লোকসংগীত, নৃত্য, পুথিপাঠ চলে রাত আটটা অব্দি। এরপর দেশবরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতির গীত-নৃত্য-অভিনয়ের অদ্বয় পরিবেশনায় আমলকি আমেজে নেমে আসে ক্যাথারসিস। এভাবেই বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বাঙালির নিজস্ব সর্বজনীন প্রাণের উৎসব বসন্তবরণ।