শামসুল আলম ঠাকুরগাঁও :: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৩ আক্চা ইউনিয়নের পালপারা গ্রামে টাঙ্গন নদীতে ব্রিজের অভাবে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার কয়েক গ্রামের মানুষ ও নদীর আশে পাশে বসবাসরত বসিন্দারা।এতে চরম দূভোগের শিকার হচ্ছেন।খরা মৌসুমে বাসের সাঁকো দিয়ে পার হেটে পার হওয়া গেলেও কোন যান বাহন চালানো যায়না ।বর্ষা মৌসুমে হেটেও পার হওয়া সম্ভব হয়না। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,বছরে পর বছর ধরে তারা বাশেঁর সাকো ও নৌকা ও বর্তমান বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভিজে নদী পার হচ্ছেন। বার বার ব্রিজটি নির্মানের কথা থাকলেও এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।এতে জীবনের ঝুঁকি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ৩ নং আক্চা, ৮ নং রহিমানপুর,৭নংচিলারং, আখানগর ও রুহিয়া এই পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় দশ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয়দের কাছথেকে আরো জানা যায় যে,৩ আক্চা ইউনিয়নে পালপাড়া গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে টাঙ্গন নদী। এই নদীতে সেতু নির্মান না হওয়ায় কয়েক গ্রামের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তাদের মৌলিক চাহিদা মিটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে, কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, ফসলি জমির সার ওষুধ পরিবহনে অসুবিধা, জমির ফসল ক্রয়-বিক্রয়ে অসুবিধা, শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠ গ্রহণে অসুবিধা, মামলা ও অন্যান্য কাজে শহরে যাতায়াত, এ ছাড়া অসুস্থ লোকজনকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হতে হচ্ছে। যারা এই ব্রীজের উপর দিয়ে চলাচল করছে তাদের জীবনও ঝুঁকিতে, তাই স্থানীয়রা, গ্রামবাসীদের কষ্টলাঘব ও দেশের উন্নয়নের স্বার্থে দ্রুত ব্রিজটি নির্মানের দাবী জানিয়েছেন।
যুগ যুগ ধরে কোনো প্রয়োজনে নদীর পশ্চিম থেকে পূর্ব পাশে আসতে হলে তাদের নদীতে ভিজে পার হয়ে আসতে হয়। নদীতে কোনো বাঁশের সাঁকো থাকায় শুষ্ক মৌসুমে তাদেরকে হাঁটুপানি পার হয়ে হেটে আসতে হয়।কিন্তু কোন যান চলাচল করতে পারে ন\ আবার বর্ষা মৌসুমে তাদের প্রায় ৫-৭ কিমি ঘুরে আসতে হয় । বিশেষ করে গ্রামের শিক্ষার্থীদের নদীর পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজও সদরের স্কুল-কলেজগুলোতে,র্কোট ও থাানায় আসতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়গ্রামবাসীদের। আবার নদীর পূর্ব পার্শে রয়েছে বাজর, সবজির বিক্রীর আড়ত ও ৩ আচকা ইউনিয়ন পরিষধ রয়েছে। ওই গ্রামের মানুষের অধিকাংশই ফসলি জমি রয়েছে নদীর পূর্ব পাশে। নদীতে সেতু না থাকায় ওই ফসলি জমিগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করতে পারে না, তারা।আবার উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতেও হিমশিম খেতে হয়। এ ছাড়া নদীর পূর্ব তীরে কোনো বাজার বা হাট না থাকায় তাঁরা পশ্চিম তীরের হাটবাজারের ওপর নির্ভরশীল। নদীর পূর্বপাশে বাজার না থাকায় নদীর পূর্ব পারের পালপারা পুর গ্রামের লোকজন তাদের উৎপাদিত ফসল ঠিকমত বাজারে বিক্রি করতে না পেরে ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার, ওষুধপত্র এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে না পেরে পূর্ব তীরের মানুষ খুব কষ্টে দিনযাপন করছে। নদী পারাপার হয়ে পাঁচ ইউনিয়ন এর ১০ গ্রামের মানুষ প্রায় লক্ষা লক্ষাধিক মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। দীর্ঘদিনের এ কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে গ্রামবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কাছে বহুবার সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে কিন্তু আশার আলো দেখেিেন।
পাালপারা এলাকার কৃষক সুনিল দাস , আব্দুল মালেক ,রফিক হেসেন ,সূর্যসেন জানান,স্বানধীনতার পর থেকেই এই বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। কত মানুষ সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছে তার কোন হিসাব নেই। এই একটি সাকোঁই কযেক গ্রামের মানষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল। কিন্তু সপ্তাহ খানেক তা স্রোতের সাথে ভেসে যাওয়ায় এখন পানিতে ভিজে নদী পার হতে হচ্ছে। নদীটি নিচু হয়য়ায় কোন ভাবেই নদীর মধ্য দিয়ে আমাদের কৃষি পণ্য পরিবহন করে আড়তে কেনা বেচা করতে পারছিনা। কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, ফসলি জমির সার ওষুধ পরিবহনে অসুবিধা, জমির ফসল ক্রয়-বিক্রয়ে অসুবিধা, শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠ গ্রহণে অসুবিধা, এ ছাড়া অসুস্থ লোকজনকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হতে হচ্ছে।
পাালপারা এলাকার সঞ্জয় দাস নামে প্রবিণ জানান গ্রামে নদীতে সেতু না থাকায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে আমরা। নেতারা আসেন ছবি তুলেন বলো এবার সেতু হবেই । কত ভোট চলে কেই প্রতিশ্রতি রক্ষা করল না।নদীর পশ্চিমপার্শে আমাদের সব আবাদী জমি।বিশেষ বর্ষা মৌসুমে কৃষিকাজে পন্যপরিবহনও শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যেতে এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রতিনিয়ত নদীতে ভিজে পার হয়ে কাজ করতে হয়। সেতু না থাকায় দুপারের মানুষের কষ্টের শেষ নেই। তারা উৎপাদিত ফসল সময়মতো ঘরে তুলতে পারে না আবার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। গ্রাামবাসীদের। তাই আমারা দ্রুত সেতুটি নির্মানের ব্যাপারে কতৃপক্ষের সূদষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে ৩ আক্চা ইউনিয়নের বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান জনাব, শিমলা রানী রায় জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদীতে চলাচল করতে গিয়ে মানুষরা যে দূর্ভোগ পোহাতে হয় তা বলে বোঝানো যায় না। ইউনিয়ন পরিষধ থেকে বারবার ব্রিজটি নির্মান করার জন্য জানান সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে, কিন্তু সারা মিলছে না।
এ বিষয়ে জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মামুন বিশ্বাস বলেন,আক্চা ইউনিয়নে টাঙ্গন নদীর ঘাটটি গূরুত্বপূর্ণ। সেখানে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।অনুমোদন হয়ে এলে ব্রিজটি নির্মিত হবে।