ময়মনসিংহ ব্যুরো :: ময়মনসিংহ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির এক সদস্যর বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় মামলার আসামী আলীগের পলাতক বিনা ভোটের এমপিকে পাহাড়া দিয়ে তার ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। যার বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ তিনি গৌরিপুর উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির ৬ নম্বর সদস্য মেহেদি হাসান। আর সেই পলাতক আসামী হচ্ছেন, ময়মনসিংহের নান্দাইল আসনের বিনা ভোটের সাবেক এমপি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার আসামী আলীগ নেতা পলাতক আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন। তার উপস্থিতির বিষয়ে বিভিন্ন সময় গৌরিপুর থানার ওসি দিদারুল ইসলামকে জানিয়ে কোন লাভ হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন গৌরিপুরের বিএনপির নেতা শহীদুল ইসলাম শহীদ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সদস্য সচীব আলী হোসেন। গৌরিপুর উপজেলা আইন শৃখলা কমিটির সদস্য মেহেদী হাসানের বহিস্কার চেয়েছেন এই দুই নেতা।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই এটি হওয়ার রকথা নয়।
অভিযোগে জানা যায় পলাতক আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর গৌরিপুর এলাকায় কলতাপাড়ায় তার মালিকানাধীন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান “কৃষাণী রাইসবার্ন ওয়েল মিল”সে আসেন। দুপুর বারটা থেকে বিকেল পাচটা চল্লিশ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান করে তিনি সেখানে ব্যবসা পরিচালনা বিষয়ে স্টাফ নিয়ে মিটিং দরকারি ফাইল সই করেন এবং সবাইকে নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। এসময় তার নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে অদুরে লোকজন দিয়ে পাহাড়া বসান মেহেদী হাসান। মেহেদী হাসান পলাতক এই আ.লীগ নেতার ওই মিলে নয় বছর যাবৎ সহকারি ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি নিয়মিত তার মিলে আসেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে মেহেদী হাসান বলেন, আমি রাতে ডিউটিতে এসে শুনেছি আনোয়ার আবেদীন খান তুহিন সেদিন ব্যবসায়িক কাজে তার মিলে এসেছিলেন । তার অবস্থানের খবর পেয়ে একদল লোক ওই মিলে হামলা চালায়। তবে ১১ সেপ্টেম্বর তিনি যখন অফিসে ছিলেন তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।
এর আগেও একাধিকবার এসেছেন আ.লীগের পলাতক সেই নেতা সে সময়েও তিনি (মেহেদী হাসান) অফিসে ছিলেন না? বলেন মেহেদী হাসান। পলাতক এই আ.লীগ নেতা নান্দাইল এলাকায় মাঝে মধ্যে আসেন বলেও জানান বিভিন্ন সুত্র।
এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সদস্য সচীব আলী হোসেন বলেন বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অবগত করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নি। সাবেক এমপি এবং নান্দাইলে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার আসামী হয়ে তিনি কি ভাবে গৌরীপুরে তিন শহীদের এলাকায় ঘোরাফেরা করে তাকে গ্রেফতার না করতে পারা পুলিশের চরম ব্যর্থতা। আনোয়ার আবেদীন খান তুহিনের মত পলাতক আসামীর ব্যাপারে পুলিশের কেউ উদাসিনতা দেখাবে গাফলিতি প্রদর্শন করবে এটা আমরা ভাবতে পারছিনা মানতে পারছি না। একজন পুলিশ কর্মকর্তার এই ভুমিকাকে জুলাই বিপ্লবের চেতনার পরিপন্থী অবস্থান বলেও মনে করেন তিনি।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য এবং গৌরীপুরের উপজেলা বিএনপির জৌষ্ট যুগ্ম আহ্বায়ক বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম খান শহীদ বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার আসামী আনোয়ার আবেদীন খান তুহিনের মত পলাতক ব্যক্তি প্রকাশ্য দিবালোকে নিয়মিত তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসছেন, ব্যবসা পরিচালনা করছেন পুলিশ তা জানে না এটা কিভাবে আমরা বিশ্বাশ করব। এ ব্যাপারে পুলিশী অবহেলায় জড়িত কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করে তিনি বলেন, যার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার মামলা চলমান কিন্তু তিনি গ্রেফতার হওয়া দুরের কথা তিনি পুলিশের নাকের ডগায় নিয়মিত অফিসে বসে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। শুধু তাই নয় বৈষম্যবিরোধি আন্দোলেন গৌরীপুরে তিন জন নিহতের ঘটনায় গৌরীপুর থানায় দায়ের করা দুই মামলার আসামী আ.লীগ নেতা ও আলীগের ইউপি চেয়ারম্যানগনও প্রকাশ্য ঘোরাফেরা করে পুলিশ তাদের ধরেনা। তারা থানার সামনে বসে চা দোকানে আড্ডা দেয় পুলিশ তাদের দেখে না। কেউ কেউ থানায় যায়। পুলিশ গ্রেফতার করে না। গৌরিপুর উপজেলা আইন শৃখলা কমিটির সদস্য মেহেদী হাসানের বহিস্কার চেয়েছেন বিএনপি ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতারা।
এবিষয়ে গৌরিপুর থানার ওসি দিদারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনোয়ার আবেদীন খান তুহিন গৌরিপুর এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করেন এ ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই।
এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ওসি মাহমুদ জালাল উদ্দিন বলেন নান্দাইলের সাবেক এমপির বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার ওপর হামলার একটি মামলা আছে মামলা তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি নান্দাইলে আসেন তাকে একথা কেউ অবগত করেনি তাই তিনি জানতে পারেন নি।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা খবরটি আমাকে জানিয়েছিল তখন কিছু করার ছিল না। তার নামে মামলা আছে সে আসামী আবার আসলে খবর পেলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজ আফিয়া আমিন বলেন, আইনশৃখলা কমিটির কোন সদস্য এরকম কাজ করতেই পারে না। এ বিষয়ে তিনি খোজ নিবেন বলেও জানান।