নারায়ণগঞ্জ :: নারায়ণগঞ্জে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তিনি জনপ্রতিনিধি নন তবুও জনসেবা ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে সর্বোচ্চ সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন যে, স্থানীয় অনেকেই বলছেন এ যেন অঘোষিত এক জনপ্রতিনিধি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ২০২৫ সালের ৯ জানুয়ারি মোহাম্মদ
ইসলাম জাহিদুল মিঞা নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন, রাজবাড়ী জেলার মানুষ এখনো তাকে স্মরণ করে তার কার্যক্রমের কারণে। পরবর্তীতে তাঁকে নারায়ণগঞ্জে বদলি করা হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি নগর উন্নয়ন, সামাজিক উদ্যোগ, প্রশাসনিক অভিযান ও জনসেবামূলক সহ সকল কার্যক্রমে এমন ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছেন যা অনেক পুরনো কর্মকর্তাদের মাঝেও সচরাচর দেখা যায় নাই এমন কার্যক্রম । সরকারি কর্মকর্তা হয়েও মানুষের সমস্যা নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করায় জেলার সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় গণমাধ্যমে তিনি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই জাহিদুল ইসলাম মিঞা গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ নামে পরিচ্ছন্ন নগর গঠনের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এক লক্ষ বৃক্ষরোপন করেন। গ্রিন এন্ড ক্লিন কর্মসূচির আওতায় জেলা ও মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, নালা, খাল ও জনবহুল এলাকায় নিয়মিতভাবে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।পোস্টার ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ করেন। সরকারি এমন কোন দপ্তর নেই যে দপ্তরের গতি ফিরিয়ে না এনেছেন। সমস্ত দপ্তর গুলি সচল ভাবে তাদের নির্দিষ্ট কার্যক্রম গুলি চালাচ্ছে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে।এতে নারায়ণগঞ্জ জেলাবাসী খুব সহজেই সরকারি সেবা সহ সরকারি সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।
প্রতিদিনই জেলার কোথাও না কোথাও দেখা যায় জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ, নালার সংস্কার কিংবা জনগণকে পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতন করার কার্যক্রম। অতীতে যেখানে এসব বিষয়ে অবহেলা বা ধীরগতি ছিল, সেখানে তিনি নিজে গিয়ে তদারকি করছেন, নির্দেশ দিচ্ছেন, আবার কখনও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে সরাসরি সমাধানের পথ বের করছেন।
নারায়ণগঞ্জে অবৈধ দখলে থাকা নদী, খাল, পুকুর ও জলাশয় উদ্ধারে গত কয়েক বছর ধরে নানা উদ্যোগ থাকলেও কার্যকর তৎপরতা তুলনামূলক কম দেখা যেত। কিন্তু জাহিদুল ইসলাম মিঞা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই খাতে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। তিনি নিজে একাধিকবার নদী দখলমুক্তকরণ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পানি প্রবাহ সচল রাখার জন্য খাল পরিষ্কার ও খনন করে দিয়েছেন এবং জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য জলাশয় সংরক্ষণে প্রশাসনিক কঠোরতা ও তদারকি জোরদার করেছেন।
এছাড়াও, মাদকমুক্ত নারায়ণগঞ্জ গড়ার প্রত্যয়ে জেলা প্রশাসক স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন। বিভি ন্ন আখড়া, মাদকসেবন ও বিক্রয়কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে এসব অভিযানে স্থানীয় পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে একটি সক্রিয় নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।
ফলে মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও অংশ নিতে শুরু করেছে।
মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও জনসাধারণের পাশে আর্থিক সহায়তা ও অনুদান নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। উদাহরণস্বরূপ, আবু সাঈদ পাঠাগারকে তিনি প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়াও দরিদ্র, অসহায় ও প্রান্তিক মানুষের জন্য ত্রাণ ও বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থাও করেন।
জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও জনকল্যাণমূলক উদ্যোগে প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ায় তিনি সমাজের নানা শ্রেণির মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।জেলার বিভিন্ন পাঠাগারকে বই উপহার দিয়েছেন।
অনেক জনপ্রতিনিধিও যেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে চলেন, সেখানে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা নিয়মিতভাবে মাঠপর্যায়ে যান, সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শোনেন এবং সিদ্ধান্ত নেন। বাজার, সড়ক,স্কুল, নদীর এমনকি সব জায়গায় তাঁর উপস্থিতি এখন নিয়মিত দৃশ্য। অনেক ক্ষেত্রেই তিনি সরকারি জটিলতা বা দীর্ঘসূত্রিতা এড়িয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেন, যা নাগরিকদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরি করেছে।
নগরবাসীর মধ্যে এখন প্রায়ই শোনা যায় ডিসি সাহেব আছেন, কিছু একটা হবে। জনপ্রতিনিধি না হয়েও এমন আস্থার জায়গায় একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার অবস্থান পাওয়া বিরল ঘটনা। স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনেও তাঁর কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে,নারায়ণগঞ্জের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তার কার্যক্রমে প্রশংসা করে থাকেন এবং পাশে থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও করে থাকেন। তিনি প্রশাসনিক সীমার মধ্যে থেকেও জনসেবায় কার্যকর ভূমিকা রাখছেন। নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার কর্মকাণ্ড প্রশাসনিক দক্ষতা ও জনমুখী দৃষ্টিভঙ্গির একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। তাঁর উদ্যোগে জেলার পরিচ্ছন্নতা, জলাশয় রক্ষা, মাদকবিরোধী অভিযান ও সামাজিক সহায়তা কার্যক্রম একসাথে এগিয়ে চলছে।কার গুণগতমান বৃদ্ধিতেও ভূমিকা পালন করে আসছেন। বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনকালে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার সামগ্রী উপহার প্রদান করে থাকেন। এবং বলেন কেবল নয় ফলাফল মুখে শিক্ষা বিকশিত হোক মানবতার দীক্ষা। শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের সবাইকে মানবতা বোধ জাগ্রত করতে হবে। তবে আমরা মানুষের মত মানুষ হতে পারব। দেশের মঙ্গলে আমরা কাজ করতে পারবো।
এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে, একজন জেলা প্রশাসক হয়েও তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে প্রকৃত অর্থে ‘জনপ্রতিনিধি’ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় সচেতন ও অভিজ্ঞ মহাল।