মো: সানাউল্লাহ্ রিয়াদ, বরগুনা:: বাংলাদেশ কৃষি প্রধান ও কৃষি নির্ভর দেশ। যে দেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমান প্রায় ৮৮.২৯ লক্ষ হেক্টর বা ১ কোটি ১৮ লক্ষ একর (তথ্যসূত্র বাংলাদেশ কৃষি পরিসংখ্যান ২০২২)। একই সাথে ২০১৯ সালের কৃষি শুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট কৃষি পরিবার রয়েছে ১ কোটি ৬৮ লক্ষ ৮১ হাজার ৭৫৭টি। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের কৃষি খাতে জিডিপিতে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দাঁড়িয়েছে ১৩.৭% থেকে বেড়ে ১৬.৮%। আর এই কৃষকরাই ৩৬.৯ শতাংশ শ্রমশক্তিকে ব্যবহার করে জাতীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড গঠন করেছে।
বর্তমানে দেশে প্রায় প্রতিটি পরিবারই কৃষি কাজের সাথে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত রয়েছেন। নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের সবজি ও ফল উৎপাদন করছেন। গ্রামের তুলনায় শহুরে মানুষগুলো এখন শখে করা ছাদ বাগানের মাধ্যমে ফলাচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি। যা নিজের পরিবারের খাদ্য চাহিদা মেটাচ্ছে অনায়াসে। ফলে ভিটামিন ও প্রোটিন এর চাহিদা মিটছে সঠিকভাবে। কেননা এ ধরণের সবজি উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়না কোনো ধরণের ক্ষতিকারক সার কিংবা ওষুধ। কেউ কেউ আবার সামান্য কেঁচো সার ব্যবহার করে থাকেন।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হলেও লেগে থাকে বন্যা, খরা, লবনাক্ততার মতো জলবায়ুগত নানা ধরণের সমস্যা। তাছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আবাদি জমি হয়ে আসছে সংকোচন। আধুনিকতার সাথে পুরোপুরি তাল মেলাতে না পারলেও অধিকাংশ কৃষকরা এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিতে ফিরিয়ে আনছেন এক ভিন্নতা। আর এ ভিন্নতাই পৌঁছে দিতে পারে কৃষি খাতে অভাবনীয় এক পরিবর্তন। পতিত জমি কাজে লাগিয়ে কৃষি কাজ করে যেমন নিজের অর্থনৈতিক মোড় ঘোরাতে পারেন, তেমনি পারেন বেকার যুবকদের কৃষি নির্ভর করে ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করতে।
অন্যদিক, বাংলাদেশে ধান, পাট, আলু, ভূট্টা, শাক-সবজি এবং অন্যান্য অর্থকরী ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে বিশে^র বুকে নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছে এক অনন্য ভিন্নতায়। যা রপ্তানি আয়ের একটি বড় উৎস। একই সাথে এ দেশে ইলিশ মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশে^ প্রথম অবস্থানে। যা এই খাতের অপার সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। অনেকে আবার গরু পালনের মধ্য দিয়ে দুগ্ধ উৎপাদনেও বেশ ভালো অবদান রাখছেন। এতে করে দেশে তৈরি হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। যা ভবিষ্যতে বেকারত্ব দূর করার অন্যতম মাধ্যম হবে।
বাংলাদেশের কৃষি একদিকে যেমন বিভিন্ন প্রাকৃতিক সমস্যায় জর্জরিত, তেমনি এর মধ্যে লুকিয়ে আছে অপার সম্ভাবনা। সঠিক পরিকল্পনা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং কার্যকর বিপণন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে এই অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ কৃষি ক্ষেত্রে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে।














