শাহীন আকতার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ :: চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত।এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি আমিনুল ইসলাম। কিন্তু বিএনপি’র সম্ভাব্য মনোনয়ন ঘোষণা নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা দাবি তোলেন, তৃণমূলের কোনো সমর্থন না নিয়ে আমিনুল ইসলাম’কে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ আসনটি জামায়াতে দখলে চলে যাওয়া আশঙ্কা বিরাজ করছে। তাই নাচোল গোমস্তাপুর ও ভোলাহাটবাসী চান, যার জনপ্রিয়তা বেশি ও তৃণমূলের জন্য যিনি কাজ করবেন, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ আসনে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করা অনেক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি জনবান্ধব নেতা নন। তাছাড়া তিনি এলাকার বাসিন্দা নন। তিনি লালমনিরহাট জেলার অধিবাসী। এলাকায় বেশিভাগ দেখা যায় না বা থাকে না, তার একাধিক ব্যবসা বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে। স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ আশা করছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা পুনরায় বিবেচনা করে যাদের সর্বদা দলের জন্য অবদান রেখেছে বা আন্তর্জাতিক সাফল্য বিবেচনা করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করবেন।চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসন গুলোতে যাদের মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা আশাবাদী বোর্ড এটা পূর্ণবিবেচনা করবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে যারা মনোনয়ন পেয়েছে তাদের কোন জনপ্রিয়তা নাই। বিএনপির সকল সিনিয়র নেতারা তাদেরকে বয়কট করেছে। তাই ত্যাগি নেতাদের দাবি পুনরায় সিদ্ধান্ত পূর্নবিবেচনা করার জন্য দলের নিকট আবেদন করছি। ত্যাগি নেতাদের আবেগময় বক্তব্যে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম তুহিন মুঠোফোনে বলেন,‘আমরা যারা বছরের পর বছর ধরে মাঠে আছি। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সবসময় অংশ নিয়েছি। আমাদের মতামত না নিয়ে বাইরের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তৃণমূল তা মেনে নেবে না।
জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি বলেন, “আমরা এলাকার মানুষের সঙ্গে দিনরাত কাজ করি। কিন্তু যাকে এলাকায় দেখা যায়নি, তিনি হঠাৎ এসে মনোনয়ন পেয়ে গেলে সংগঠনের ভেতরে ভাঙন ধরবে। বিএনপি’র আরেকজন জনবন্ধব নেতা বা অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘৯০ দশকের এরশাদ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেধাবীছাত্র ছাত্রদলের নেতা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ( বুয়েট ) এর আহসানউল্লাহ হলের ভিপি ও ছাত্রদল সভাপতি ছিলেন। সে বিশ্বাস করে, মনোনয়ন যাকে দেবে তার সর্বাধিক দক্ষতা, যোগ্যতা, সৎ ব্যক্তি, শিক্ষিত ও মেধাবী, ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা আছে। এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক সহ বিভিন্ন শ্রেণীর পেশাজীবি মানুষের সাথে ভালোভাবে চলার মানসিকতা আছে এমন ব্যক্তিকে
মনোনয়ন দেওয়া হোক। তিনি আরোও বলেন, ‘দল বাঁচাতে হলে এলাকার পরীক্ষিত নেতাদের মধ্যে থেকে যে কোন একজনকে মনোনয়ন দিতে হবে। আমিনুল ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো প্রার্থী না দিলে কেউ মেনে নেব না। এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের খোকন বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি অনুরোধ জানাই, তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। আগামী নির্বাচনে তৃণমূলই বিএনপির শক্তি। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও স্থানীয় মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত না হলে নাচোল গোমস্তাপুর, ভোলাহাট বিএনপির নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তীব্র বিভাজন তৈরি হতে পারে। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি পুনর্গঠনে যোগ্য প্রার্থী দিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। রাজনৈতিক নেতারা অনেকেই বলেছেন,আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি বাংলাদেশী পেশাজীবীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা হলে তা শুধু দলের জন্য নয়,দেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এলাকায় শান্তি শৃংঙ্খলা উন্নয়নের স্বার্থে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে যাদের জনপ্রিয়তা আছে বা যোগ্য ব্যাক্তিকে মনোনায়ন দেওয়ার দাবী জানান বিএনপির সকল নেতাকর্মীরা। সে দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপির যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। তাই পুনরায় পূর্ণবিবেচনায় করে যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ আসনটি বিজয় নিশ্চিত হবে।














