খাইরুল ইসলাম :: রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গতকাল (২১ জুলাই) দুপুরে একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয় গভীর শোক প্রকাশ করছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৭১ জন, যাঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়াল নয়, ভেঙে দিয়েছে আমাদের জাতিগত নিরাপত্তাবোধ, কাঁপিয়ে দিয়েছে জাতীয় বিবেক। একটি স্কুলের উঠোনে, যেখানে শিশুরা স্বপ্ন আঁকে, সেইখানে আজ পড়ে আছে পোড়া খাতা, দগ্ধ শরীর আর পিতামাতার স্তব্ধ কান্না।
শিশুরা ছিল আমাদের আগামীর আকাশে ভেসে থাকা তারার মতো—উজ্জ্বল, অপূর্ণ সম্ভাবনায় ভরা। কিন্তু সেই তারা যেন আগুনের গহ্বরে ঢলে পড়ল, নিভে গেল এক চিরন্তন অন্ধকারে। এই ক্ষতি শুধু সংখ্যায় গোনা যায় না; প্রতিটি শিশুর মৃত্যু একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু, একটি সম্ভাবনার নির্মম সমাপ্তি। এই বেদনা আমাদের ভাষাকে স্তব্ধ করে দেয়, আমাদের হৃদয়কে করে শূন্য।
নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আনিছা পারভীন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এই হৃদয়বিদারক ঘটনার প্রতি গভীর শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ করছেন। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছেন।
নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয় অনুভব করে, যেন আর কোনো শিশুর হাসি কখনো থেমে না-যায়, যেন আর কোনো স্বপ্ন অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিভে না-যায়। এই মর্মান্তিক শোককে বুকে ধারণ করে আমরা প্রত্যাশা করি, রাষ্ট্রীয় ও সামরিক পর্যায়ে মানবিকতা, দূরদৃষ্টি ও বিজ্ঞানভিত্তিক নিরাপত্তানীতি কঠোরভাবে গড়ে তোলা হবে। যেন কখনো আর এমন করুণ মুহূর্তের সাক্ষী হতে না-হয় আমাদের দেশ এবং প্রিয় মানুষগুলোর।
একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণ হয় বিদ্যালয়ের উঠোন থেকে। সেই উঠোন যেন আর কখনো আগুনের গোলা হয়ে না-ওঠে—আমরা এই প্রার্থনায় শামিল হই।
এই শোক আমাদের একার নয়—এই শোক সমগ্র দেশের, সমগ্র মানবতার। আমরা স্মরণ করি, শ্রদ্ধা জানাই, এবং প্রতিজ্ঞা করি—আর যেন এমন অন্ধকার না-নামে শিশুর কাঁধে।
শ্রদ্ধা ও শোকাবহ হৃদয়ে—
নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়