খাইরুল ইসলাম:; নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ অনুষ্ঠিত হলো ‘শিক্ষার রাজনৈতিক অর্থনীতি’ বিষয়ক বক্তৃতা। একাডেমিক আয়োজনে হলেও আলোচনায় প্রধানত শিক্ষার মান, নীতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মৌলিক প্রশ্নগুলো উঠে আসে। মূল বক্তা অধ্যাপক ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান, সহযোগী ডিন, বিজনেস এন্ড এন্টারপ্রেনারশিপ অনুষদ, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাকে ব্যাখ্যা করলেন এক বিস্তৃত দৃষ্টিকোণ থেকে। তাঁর বিশ্লেষণে শিক্ষা হয়ে উঠল কেবল ডিগ্রি অর্জনের পথ নয়, বরং রাজনৈতিক অগ্রাধিকার ও অর্থনৈতিক বিন্যাসের আয়না। স্বাগত বক্তব্যে অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব সিরাজুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দিলেন—জ্ঞান শুধুই পাঠে সীমাবদ্ধ থাকে না, এটি আলোচনার মধ্য দিয়েই জন্মায়; বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পাঠশালা নয়, বরং সমাজ পরিবর্তনের শক্তিশালী অনুঘটক।
সভাপতির আসনে ছিলেন নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম। তাঁর কণ্ঠে ধ্বনিত হলো এক নির্মম বাস্তবতা—‘শুধু সংখ্যা বাড়লেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বাড়ে না। দরকার একটি পূর্ণাঙ্গ মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়।’ সংখ্যার ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া মানের প্রশ্ন যেন তাঁর বক্তব্যে এক গভীর অনুরণন হয়ে ফিরে এলো। তিনি আরও প্রশ্ন তুললেন—যখন নানা খাতে সংস্কার কমিটি রয়েছে, তখন শিক্ষা সংস্কার কমিটি কেন অনুপস্থিত? এ প্রশ্নে যেন ধরা দিলো দেশের শিক্ষাব্যবস্থার নীরব যন্ত্রণার শব্দ, যা সংস্কারের আলো খুঁজে ফিরছে।
আজকের এই বক্তৃতা শ্রোতাদের মনে জাগিয়ে তোলে এক অনিবার্য সত্য—শিক্ষা কোনো নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া নয়; এটি ক্ষমতা ও অর্থনীতির ছায়ায় গড়ে ওঠে, আর সেই জন্যই শিক্ষাকে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেতে হয় বারবার।
নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আয়োজন ছিল এক চিন্তার মিলনক্ষেত্র, যেখানে শিক্ষার মান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি নীরব প্রার্থনা ভেসে উঠল—শিক্ষা হোক মুক্তির হাতিয়ার, বিশ্ববিদ্যালয় হোক মানের আলোকবর্তিকা।