আল-মায়ামী- বখতিয়ার আহমেদ রনী এন্ড এসোসিয়েটস লিঃ গতকাল শনিবার ১৭ই আগষ্ট ঢাকা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে মূল এবং সমাপনী বক্তব্য পাঠ করেন, বখতিয়ার আহমেদ রনি এবং এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন, এ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার ও নুর জাহান লতা। সংবাদ সম্মেলনে বখতিয়ার আহমেদ রনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের জনগনের টাকায় অর্জিত অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং বিচার। গবেষনা, চেষ্টা ও পরিশ্রম করে আসছিলেন। যাতে করে এন.বি.আর এবং এন.বি.আর এর সাথে সম্পৃক্ত প্রত্যেকটি শাখা-প্রশাখা হতে দুর্নীতি, ঘুষ ও অনিয়ম দুর হয়। কিন্তু সিস্টেমের জটিলতা, নিয়ম ব্যবস্থা ইত্যাদি সঠিক ভাবে চালু না থাকায় তিনি সফলকাম হতে পারছিলেন না। এখন তারা মনে করে নিজেকে এবং দেশের পরিবর্তনের সময় এসেছে। আজকের মূল আয়োজক জনাব বখতিয়ার আহমেদ রনী বিষয়ে শুধু বলা যায় যে, তিনি রাজস্ব গবেষক, কর বিশেষজ্ঞ এবং তথ্য প্রযুক্তিতে সফল নতুন এক নাম। আইন বিষয়ক লেখা-পড়া শেষ করে এবং তথ্য প্রযুক্তির উপর জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। কৃষি খাতে উনার অংশীদারিত্ব অনেক।
১। ১৬ বছর আমাদের মাথার উপর একটি বোঝা ছিল। ছাত্র এবং সাধারণ জনগনের আন্দোলনের মাধ্যমে আজ যেই বোঝা মাথা থেকে সরে গিয়েছে আমরা কেউই চাইনা এই বোঝা আবার আসুক।আপনারাও আশা করি চান না,কারন এতোদিন আপনারাও সত্য বিষয়গুলো প্রচার করতে পারেন নি ।
যেহেতু এখন সত্য প্রচারের সুযোগ পাচ্ছেন,সেহেতু অতীতের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সত্য প্রচার করবেন বলে আমি মনে করি ৷
২। পরবর্তী ৫ বছরের জন্য আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ করি। সবাই মিলে এই সুযোগে দেশটাকে গড়ি।বিশ্বের দরবারে যেন আমরা নিজের পরিচয় গর্ব করে দিতে পারি ।
৩। ৭ বছর যাবত ৩টি বিষয়ের উপর কাজ করছি ।(১) কৃষিখাত,(২) রাজস্বখাত, (৩) আইটি বা প্রযুক্তি খাত ।সর্বদা চেষ্টা করে আসছিলাম এই ৩টি সেক্টর হতে দূর্নীতি,অনিয়ম এবং ঘুষ ইত্যাদি বন্ধ করার । কিন্তু আইনগত জটিলতা, নিয়ম, ব্যবস্থাপনা সবকিছুই ছিল ভিন্ন।
৪। অপরাধ,ঘুষ,দূর্নীতির সাথে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সকল স্তরেই কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। ঘুষের মতো জঘন্য অপরাধের প্রতিবাদ করলেই বিভিন্ন ধরনের মামলা ভয়ভীতির স্বীকার হতে হয়েছে।
৫। একটা সময় আমরা GEN-Zকে ফার্মের ব্রয়লার মুরগি বলতাম, এখন তাদের কারণেই দেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাচ্ছি। স্যালুট জানাই ছাত্র সমাজকে এবং বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সকল দলীয় উপদেষ্টাদের । আজকে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় সকল উপদেষ্টা মন্ডলীদের নিকট ৬ টি অনুরোধ প্রকাশ করছি। (ক) অতিদ্রুত মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নিয়ন্ত্রণে ২৫ টি মন্ত্রনালয় নিজ হাতে না রেখে রাজনীতির সাথে জড়িত নয় এমন ২৫ জনকে নিযুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলে আমি মনে করি । (খ) ছাত্র সমাজকে যখন প্রয়োজন হবে তখন মাঠে নামান তার আগ পর্যন্ত লেখাপড়ায় মনোযোগী করান। অতি দ্রুত তাদেরকে লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়ার সুব্যবস্থা করা খুব দরকার। (গ) দেশ গড়ার জন্য বা রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সকল সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, পেশাজীবি/ব্যবসায়ীদের কাজে লাগানো দরকার। (ঘ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সহ সকল সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের সরকারী সম্পদের হিসাব নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।যাহা সরকার কর্তৃক চলমান। ঙ) দেশের জনগনের যত টাকা পাচার হয়েছে বিদেশে তা দেশে ফেরত আনার সু-ব্যবস্থা করা এবং দেশের ভিতরে কালো টাকা গুলোকে বাতিল করার জন্য ১০০০/ এবং ৫০০/টাকার নোট বাতিল করা। (চ) সরকারী,শায়ত্বশাসিত ব্যাংক সহ সর্ব জায়গায় দলীয় করণ বা রাজনীতি বন্ধ করতে হবে এবং যারা ইতিপূর্বে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল গুরুত্বপূর্ণ পদ হতে সরিয়ে নিরপেক্ষ লোক বসাতে হবে। দেশ সংস্কারের জন্য ১৭ জনে সম্ভব না । ছাত্র সমাজের সমর্থনে নুন্যেতম ৩০০ জন সহযোগী দরকার, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সহ ৩০১ জন। ছাত্র সমাজ পিছন থেকে সমর্থন দিবে, অপর ৩০১ জন জনগন, মিডিয়া, প্রশাসনকে নিয়ে দেশ/রাষ্ট্র সংস্কার করিবেন । এ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার বলেন, ছাত্র সমাজকে আরও স্বাগতম জানাই বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি দপ্তরে দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম ইত্যাদি বিদ্যমান। একার পক্ষে পুরো দেশটাকে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ছাত্র সমাজ, সরকার, জনগন, পেশাজীবি সহ সবাই মিলে কাজ করলে দেশকে এবং নিজেকে পরিবর্তন করা সম্ভব । দীর্ঘদিন যাবত রাজস্ব বোর্ডের অনিয়ম গুলোর প্রতিবাদ করে আসছিলাম। বোর্ডের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সদস্য এবং সকল কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়, কিন্তু কোন প্রতিকার পাওয়া যায় নাই।
বরং আমাদের নামে মিথ্যা মামলার অপবাদ, মামলার হুমকি সহ অনেক নির্যাতন করেছেন। যার কারন আমরা কেন তাদের অসৎ কর্মের প্রতিবাদ করি। সর্বশেষ ঐশিলা নন্দিনী (ছাত্রী), লেখাপড়ার পাশাপাশি চাকুরী করে নিজ সংসার দেখতেন, তার জীবনটাও শেষ করে দিয়েছেন। আমরা ন্যায় বিচারের জন্য বিজ্ঞ আদালত হয়ে দুদকে অভিযোগ করেছি। কিন্তু আওয়ামী শাসন ব্যবস্থার কারনে আজও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নাই। অন্য বিচারগুলোর একাংশ মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে রীট করা হয়েছে। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছেন। তাছাড়া ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম তো ছিলই। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলব আমাদের চেষ্টা যেন বৃথা না যায়। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক। বিচার করা হোক এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে আনার সু ব্যবস্থা করা হোক। আমাদের জানা মতে ৯৪ বিলিয়ন ডলার অর্থ পাচার হয়েছে আমরা তাহার ৮০% সরকারী কোষাগারে জমা করিতে সক্ষম,যেহেতু রাষ্ট্রীয় বিষয় এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই কর্তৃপক্ষ ব্যাতীত সকল তথ্য প্রদান করা সম্ভব হইলনা। নুরজাহান লতা বলেন, স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে কথা বলার ও মতামত প্রকাশের শুভেচ্ছা। সেইসাথে ধন্যবাদ জানাই বখতিয়ার আহমদ রনি স্যার কে এবং জনগনের সাথে হওয়া অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে শ্লোগান তুলে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের ব্যবস্থা করার জন্য এবং সাবাশ জানাই সেইসব ছাত্র বীরদের যাদের কারণে আমরা আজ ন্যায়বিচারের দাবী করতে পারছি। বাংলাদেশের সব সেক্টরে অরাজকতা দুর্নীতি বিদ্যমান ৷
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে সাথে শিক্ষা,গৃহায়ন,ভূমি,পাসপোর্ট সর্বক্ষেত্রেই ঘুষ এর মতো দূর্নীতি বিদ্যমান ।আমি আজ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে সাথে হাউজিং স্টেট এর দুর্নীতি সম্পর্কেও বলতে চাই। আমি দিনাজপুর শহর সদর এর বাসিন্দা । আমার বাবা ৩৫ বছর আগে একটি বাড়ী দিনাজপুর হাউজিং কর্তৃপক্ষের অধীনে ক্রয় করার জন্য টাকা বাড়ীর মূল্য বাবদ টাকা জমা দেয় এবং বাড়ীটি নিজের নামে দখল পায়।বাড়িটি কেনার ৩ বছর পর আমরা জানতে পারি কিছু গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অসৎ কর্মকর্তার কারণে বাড়িটি আমাদের দখল থাকা সত্তেও আমাদের বাড়িটির রেজিস্ট্রি বন্ধ হয়ে যায় । তৎকালীন সরকার এবং তারপ্রবর্তী সরকারের আমলেও আমরা কোনো ন্যায় বিচার পাইনাই। আমার বাবার কোনো ছেলেসন্তান নাই আমরা আমজনতা যাদের কোনো দলের সাথে সম্পৃক্ততা নেই। আমি ও আমাদের মতো যারা গৃহায়ণ এর অসৎ কর্মকর্তাদের অত্যাচারের স্বীকার ভুক্তভোগী তাদের সম্পত্তির হিসাব নেয়া হোক এবং সেইসাথে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।আমার বাবার মতো যারা এখনও গৃহায়ণের বাড়ীগুলো টাকা জমা দেয়ার পরেও রেজিস্ট্রি করতে গৃহায়ণের বা পারেনি তাদের বাড়ীগুলো রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করা হোক।আমার পরিবার কোন দলীয় সদস্য নয় এবং আমাদের কোনো কোটা না থাকার কারণে আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার পাইনাই।
আমার দাবী বর্তমান অন্ত বর্তীকালীন সরকারের সময়ে হাউজিং এর এসব মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার হোক । তাছাড়া ৯৪ বিলিয়ন ডলার যা আমার সোনার বাংলা থেকে পাচার হয়েছে তার ৮০% সরকারী কোষাগারে জমা করিতে আমরা সক্ষম সেহেতু, বিষয়টি রাষ্ট্রীয় বিষয় এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ কর্তৃপক্ষ ব্যাতীত সকল তথ্য প্রদান করা সম্ভব হইলনা। যা পাচার হয়েছে, যাহার প্রমান/দলিল বিদ্যমান দূর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক। কারণ দেশের টাকা দেশে ফেরত আসলে বহিবিশ্বের মতো আমরাও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারব। স্বাধীন বাংলায় এই বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে দেশের সূর্য সন্তানদের অধীনে আমার পরিবার সেইসাথে দেশের সকল স্তরের জনগন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সব সেক্টরেই ন্যায় বিচার পাবে।