*শরীয়তপুর সংবাদদাতা ॥*
শরীয়তপুর-,০১ শরীয়তপুর ( সদর-জাজিরা) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য । তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শরীয়তপুর-১ নির্বাচনী এলাকা শরীয়তপুর (সদর ও জাজিরা) উপজেলার প্রত্যেকটি গ্রামে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনে জামায়াত প্রার্থী ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ তার ব্যক্তিগত ইমেজ ও সামাজিক ভূমিকার কারণে দলীয় ও সাধারণ ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন বলে ভোটাররা মন্তব্য করেছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শরীয়তপুর জেলা নায়েবে আমীর কেএম মকবুল হোসাইন বলেন, শরীয়তপুর-১ আসনে ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ ব্যতীত জোটের নীতি নির্ধারকরা যদি অন্য কোন প্রার্থী নিয়ে চিন্তা করেন, তাহলে তারা জামানত হারাবেন বলে সাধারণ ভোটাররা মন্তব্য করেছেন। নির্বাচনী মাঠে এখন পযর্ন্ত জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ-এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এদিকে শরীয়তপুর-১ আসন বিএনপি দলীয় মনোনয়নকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে দলীয় অন্তর্কোন্দল ও মনোনয়ন-সংকট। বিশেষ করে বিএনপির ঘোষিত দলীয় প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলামকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র মতবিরোধ, যা প্রতিদিনই নতুন নতুন রূপ নিচ্ছে। শরীয়তপুর-০১ আসনে তাকে মেনে নিতে পারছে না তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা। প্রায় প্রতিদিনই, সাঈদ আহমেদ আসলামের মনোনয়ন বাতিল করে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন কালুকে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে বিভিণ্নস্থানে মিছিল-সমাবেশ করেছে দলীয় নেতাকর্মীর একাংশ। তাদের দাবি, সাঈদ আহমেদ আসলাম শরীয়তপুর-৩ আসনের ডামুড্যা উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
শরীয়তপুর জেলা সদরের বিএনপি নেতা চান মিয়া মাদবর, সাবেক পৌর কমিশনার আব্দুস সামাদসহ বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামত উপক্ষো করে, দলের জন্য যিনি বছরের পর বছর শ্রম দিয়েছেন, তাকে বাদ দিয়ে অন্য উপজেলা থেকে জেলা সদর আসনের প্রার্থী করা হলে- সে সুযোগ কাজে লাগাবে জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য দলের প্রার্থীরা। তারা সাঈদ আহমেদ আসলামের মনোনয়ন বাতিল করে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন কালুকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে বিভিণ্নস্থানে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, মশাল মিছিল এবং সড়ক অবরোধ করে আসছেন। এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা একাধিকবার শহরের বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেন। নেতাকর্মীদের এমন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সাধারণ ভোটাররাও পড়েছেন দিধাদ্বন্দ্বে।
শরীয়তপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আলী আজম সরদার বলেন, ‘শরীয়তপুর-১ আসনে অন্য একটি নির্বাচনী এলাকা থেকে একজন নেতাকে এনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ত্যাগী নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা আমরা মানতে পারছি না। মনোনয়ন পরিবর্তন না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। শরীয়তপুর সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল ছৈয়াল বলেন, সাঈদ আহমেদ আসলাম জেলা পর্যায়ের নেতা হলেও তিনি শরীয়তপুর-৩ নির্বাচনী এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। জাজিরা উপজেলার এক তরুণ ভোটার নিরব সিকদার বলেন, আগে ভাবতাম বিএনপিই একমাত্র বিকল্প। কিন্তু এখন যদি তারা নিজেরাই এক থাকতে না পারে, তাহলে বিকল্প ভাবতেই হচ্ছে। যারা সুশাসনের কথা বলবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে থাকবে তাদেরকেই এবার সমর্থন দিব।
সদর উপজেলার তরুণ ভোটার ও সাইদ আসলামের সমর্থক আনিছ সরদার বলেন, তারুণ্যের অহংকার দেশ নায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাকে পছন্দ করে ধানের শীষ দিয়েছেন আমরা সবাই মিলে তাকেই ভোট দিব। সে হোক অন্য উপজেলার বাসিন্দা।
শরীয়তপুরের বাসিন্দা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. তোয়াব হোসেন বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে তৃণমূলকে উপেক্ষা করলে তার পরিণতি ভাল হয়না। শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভক্তি যদি দ্রুত নিরসন করা না হয়, তাহলে এ আসনে সরাসরি লাভবান হবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলাম বলেন, “আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি বিশ্বাস করি না, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই।”













