আব্দুল কাদের, কুড়িগ্রাম- বাইক নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় কুড়িগ্রাম-উলিপুর-চিলমারী সড়কে বাইক ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাক্টর চাপায় কিশোর বাইক চালক ও আরোহী কলেজ শিক্ষার্থী দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের নিরাশির পাথার নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত দুই শিক্ষার্থী হলেন প্লাবন আহমেদ এবং সাইফুল ইসলাম সৌরভ। প্লাবন উলিপুরের পান্ডুল ইউনিয়নের ঢেঁকিয়ারাম গ্রামের বকিয়ত উল্লাহ ও পারভীন বেগম দম্পতির ছেলে। সৌরভ একই গ্রামের বক্কর মিয়া-ছকিনা বেগম দম্পতির ছেলে। তারা দুজন সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এবছর কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে তাদের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুরে প্লাবন ও সৌরভ মোটরসাইকেলে করে চিলমারী থেকে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। এসময় নিরাশির পাথার নামক স্থানে কুড়িগ্রাম-উলিপুর-চিলমারী সড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা মাটি পরিবহনের কাজে নিয়োজিত অবৈধ একটি ট্রাকটর মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে সৌরভ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। গুরুতর আহত প্লাবনকে উদ্ধার করে উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান। ট্রাক্টরটি নিয়ে ঘাতক চালক দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মটরসাইকেলটিও বেপরোয়া গতিতে ছিল আবার বিপরীত দিকে থেকে আসা ট্রাক্টরটিও ছিল বেপরোয়া গতিতে। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ ট্রাকটরসহ চালক পালিয়ে গেছে। আমরা সনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘ অবৈধ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রায়ই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আবারও তৎপরতা বাড়ানো হবে।’
অবৈধ ট্রাকটর চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিএম কুদরত-এ-খুদা বলেন, ‘ সড়কে অবৈধ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে। এছাড়াও উঠতি বয়সি ছেলেদের যাতে মোটরসাইকেল দেওয়া না হয় সেজন্য অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।’