শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :: পতিত জমিতে বিএমডিএ’র সেচ সুবিধায় বোরো ধান চাষ করে লাভবান কৃষক আব্দুল মান্নান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঠাকুরগাঁও সদরের সালান্দর এলাকায়
কৃষক আব্দুল মান্নান সুগার মিলের পতিত জমি লিজ নিয়ে বিএমডিএ সেচ সুবিধা নিয়ে বোরো ধান বীজ চাষ করেছেন।
কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৫০ একর জমি সেচ সুবিধা না থাকায় অনেক সময় পতিত থাকত। আমি এবছর সেই পতিত জমি সরকারি ভাবে লিজ নিয়ে বিএমডিএ কাছে সেচ সুবিধা নেই। সেই সেচ সুবিধা নিয়ে এই বোরো মৌসুমে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান যেমন ব্রি ধান-২৯ ,ব্রি ধান-১০৮, হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের বিজ চাষ করি। এতে প্রায় আমার ২০ লাখ টাকার মত লাভ হবে।
তিনি জানান বিএমডিএ’র সেচ সুবিধার কারণেই এখানে বোরো ধান আবাদ করা সম্ভব হয়েছে।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও।জেলায় তেমন বড় কোন শিল্পকারখানা না থাকায় কৃষিই এ অঞ্চলের কৃষকের একমাত্র আশা ভরসা।ঠাকুরগাঁও উঁচু ও খরাপ্রবণ জেলা।এ জেলায় আবাদি জমিতে সেচ সুবিধা ব্যতিত বিভিন্ন মৌসুমে ধান,গম,ডাল,পাট,ভুট্টা,আলু ও বিভিন্ন সবজির ভালো ফলন ফলানো অসম্ভব।তাই স্বল্পমূল্যে কৃষকদের মাঝে সরকারি ভাবে সেচ সুবিধা দিতে জেলায় অধিক পরিমানে নতুন গভীর নলকূপ ও সোলার সেচ পাম্প স্থাপন এবং স্থাপিত গভীর কূপ গুলোর সেচনালা সম্প্রসারণ ও আধুনিনকায়ন করলে ধান,গম ভুট্টা আলু ও সবজি সহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বহুগুনে বাড়বে এবং জেলার কৃষকরা ও দেশ অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হবে।এরই ধাধারাবহিকতায় কৃষকের মাঝে স্বল্পমূল্যে সেচ সুবিধা দিয়ে নিরলস ভাবে মাঠে কাজ করে চলেছে ঠাকুরগাঁও বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিএমডিএ)।
জানা যায় যে,ঠাকুরগাঁওয়ে ৫টি উপজেলায় মোট দেড় হাজারের ও বেশি গভী নলকূপ, পাতকুয়া ও লো লিফট পাম্প রয়েছে ।(এলএলপি) সোলার ও বিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্পের সাহায্যে ভূ-উপরিস্থ বিভিন্ন নদীর পানি ব্যাবহার করে স্বল্প খরচে সবজি সহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করে লাভবান হচ্ছে জেলার কৃষকগন। এতে একদিকে কৃষকের সেচ খরচ অনেক কমছে এবং পানির অপচয় রোধ হচ্ছে। ঠাকুরগাঁও বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিএমডিএ) এসব গভীর নলকূপ ও সেচ পাম্প স্থাপন করেছে। এরই মধ্যে ওই জমিতে বিভিন্ন সবজি সহ ইরি-বোরো ধান আবাদ করে সুফল পাচ্ছেন কৃষক। কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যয় হ্রাস সহ সেচ কার্যক্রমে ডিজেল কিংবা বিদ্যুৎ বিল থেকেও রেহাই পাচ্ছেন চাষীরা। প্রতি একরে নামে মাত্র সেচ খরচে সেচ সুবিধা মিলছে বলে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানায়।
যা জেলার জন্য পর্যাপ্ত নয়।কৃষকদের মতে এই সেচ সুবিধা আরো বাড়ানো দরকার। জানা যায় যে, ঠাকুরগাঁও সদরসহ অন্য উপজেলায় চালুকৃত প্রায় এক হাজারের ও বেশি গভীর নলকূপগুলোর সেচনালা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন যোগ্য।এবং স্থানীয় কৃষকরা সেচনালা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করার জন্য বারবার কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করছে। কৃষকের সকল জমি এই বিএমডিএর সেচ এর আওতায় আসলে ফসল উৎপাদন বাড়বে এবং কৃষকের খরচ কমবে।
ঠাকুরগাঁও সদরের কৃষক মোঃ সোলায়মান,মইনুল হক, নজরুল ইসলাম,আলম হোসেন,আমিরুল ইসলাম সহ অনেক কৃষক জানান,আমরা বিএমডিএর এর গভীর নলকূপের সাহায্যে স্বল্প খরচে পানির অপচয় রোধ করে ধান গম, ভুট্টা,আলু ও সবজি আবাদে কৃষক লাভবান হচ্ছে।এতে আমাদের সেচ খরচ অনেক কম হচ্ছে ।কিন্তু আমাদের জেলার প্রায় এক হাজার গভীর নলকূপ গুলোর সেচনালা সম্প্রসারন ও আধুনিকায়ন যোগ্য যেটি করলে কৃষকরা কৃষকরা স্বল্প মূল্যে বেশি জমিতে সেচ দিতে পারবে এতে পানির অপচয় রোধ হবে,কৃষকের উৎপাদন খরচ কমবে এবং ফসল উৎপাদন বহুগুণে বাড়বে। সরকারি ভাবে সোলার সেচ পাম্প স্থাপন ও গভীর নলগুলোর সেচনালা সম্প্রসারণ করলে কৃষকরা আরো বেশি উপকৃত হবে ফসল উৎপাদন বহুগুন বাড়বে।
ঠাকুরগাঁও বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিএমডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান। কৃষক আব্দুল মান্নান এর ন্যায় ঠাকুরগাঁওয়ে ৫টি উপজেলায় বিএমডিএর গভীর নলকূপ, পাতকুয়া ও এলএলপি সোলার পাম্পের সাহেয্যে স্বল্প খরচে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে কৃষক লাভবান হচ্ছে। যে সকল গভীর নলকূপ গুলোর সেচনালা সংকীর্ণ সেখানে সম্প্রসারণ এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মাজেদুল ইসলাম জানান, ‘বরেন্দ্র বহুমুখীর উদ্ভাবন করা প্রিপেইড কার্ড কৃষি প্রধান এ জেলার কৃষকদের এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।’ গভীর নলকূপ গুলোর সেচনালা সম্প্রসারণ ও আরো আধুিনকায়ন করলে কৃষকরা আরো বেশি উপকৃত হবে ফসল উৎপাদন বহুগুন বাড়বে এবং জেলার মানষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে।